ঝিনাইদহে ফার্মেসিতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান ও জরিমানা আদায়
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ ৬ মাস বা এক বছর পর্যন্ত খেলে তা স্বাস্থের জন্য কোন ক্ষতি করে না। এটি মেডিকেল টেস্টে প্রমানিত। মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ খাওয়া যাবে না এর কোন বিধান নেই বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: নাজমুল হাসান। আজ বুধবার সকালে ঔষধ ফার্মেসীতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকালে তিনি এ কথা বলেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম জানান, কোন ক্রমেই মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ খাওয়া যাবে না। মেয়াদ শেষ হলে ঔষধ যে উপাদান দিয়ে তৈরি হয় তার গুনগতমান নষ্ট হয়ে যায়। যা খেলে মানবস্বাস্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারন হতে পারে।
এমনকি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কোন ঔষধের মেয়াদ কবে শেষ হবে, কতদিন গুণগতমান থাকবে তা কোম্পানীগুলো দেখেই তৈরি করে। ঔষধ প্রশাসন কর্মকর্তা কিভাবে কোন নির্দেশনায় মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ খাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেছেন সেটা আমার বোধগম্য না।
জানা যায়, প্রায় এক মাস যাবৎ জেলা শহরের বিভিন্ন ঔষধ ফার্মেসীতে পূর্বের ৫% বা ৭% কমিশনে ঔষধ বিক্রি বন্ধ করে দেয় বিক্রেতারা। পরে তারা কোম্পানীর এমআরপি রেটে ঔষধ বিক্রি শুরু করে যা কিনতে গিয়ে অনেকটা নাভিশ্বাস ওঠে ক্রেতাদের মধ্যে।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার শহরের মাসুদ ফার্মা, তাজমহল, আক্তার, পান্না, নিউ সালেহা, সিদ্দিক, আলহেরাসহ প্রায় ১৫ টি ফার্মেসীতে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে। এদের মধ্যে ৩ মাসুদ ফার্মা, তাজমহল ও আক্তার ফার্মেসীতে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফানুল হক।
এসময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল, জেলা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: নাজমুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ইরফানুল হক জানান, সরকারী নির্দেশনা না থাকলেও ফার্মেসীতে কমিশন বাদে এমআরপি রেটে ঔষধ বিক্রি হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ রাখায় শহরের মাসুদ ফার্মাকে ২ হাজার, আক্তার ফার্মেসীকে ৫ হাজার ও তাজমহল ফার্মেসীকে ৫ হাজার টাকা জারিমানা করা হয়। সেসময় বাকিদেরকে সতর্ক করা হয়েছে ভবিষ্যতে যেন এমন অনিয়ম না করা হয়।
তিনি আরো জানান, ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক মো: নাজমুল হাসান যে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ খাওয়া যাবে বলেছেন তা তাকে প্রমাণ করতে হবে।
এদিকে ক্ষুব্ধ সাধারন মানুষ অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন এমন ইচ্ছামত বিক্রেতারা ঔষুধ বিক্রি করে আসছে কিন্তু ঔষধ প্রশাসন কোন তদারকি করে না। ঢাকাসহ পাশ্ববর্তি বিভিন্ন জেলায় ৫%, ৭ %, ১০ % হারে ঔষধ বিক্রি হচ্ছে কিন্তু ঝিনাইদহে এর ব্যতিক্রম। সরকারের উচিত উপরমহল থেকে এর তদারকি করা এবং যারা এর সাথে জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালকের মন্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি তিনি আইন না মেনে মন্তব্য করে থাকেন তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।