ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার বাওড় বেষ্টিত একটি প্রত্যন্ত জনপদ হিজলী গ্রাম। গ্রামের সাথে জেলা বা উপজেলা শহরের সাথে সরাসরি কোন বাস, ট্রেন বা লঞ্চ যোগাযোগ নেই। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষি কাজ পাশাপাশি রয়েছে কিছু মৎস্যজীবী।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ “আমার গ্রাম, আমার শহর” এই ধারণাকে উপজীব্য করে জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলার একটি অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া বাওড় বেষ্টিত হিজলী গ্রামকে স্মার্ট ভিলেজ বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নেহরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুষ্মিতা সাহা কাপাশহাটীয়া ইউনিয়নের কাপাশহাটীয়া বাওড়ের পাশে হিজলী গ্রামকে বেচেঁ নিয়ে দীর্ঘ ২মাস যাবৎ কাজ করার পর প্রত্যন্ত অনগ্রসর ও অনুন্নত এই গ্রামটি এখন হয়ে উঠেছে দেশের প্রথম সারির স্মার্ট ভিলেজে। গ্রামটি এখন বাল্যবিবাহ মুক্ত, মাদক ও অপরাধ মুক্ত,আত্মহত্যা মুক্ত, স্বনির্ভর, ডিজিটাল ও পরিবেশ বান্ধব। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের এই স্মার্ট ভিলেজ হবে বেকারত্বহীন, সবার জন্য থাকবে নিরাপদ পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা, শতভাগ ব্যবহার হবে বাড়ির আঙ্গিনার চাষযোগ্য জমি, যুবকরা নেশাগ্রস্থ ভাবে পড়ে থাকবে না মোবাইল স্কিনে, হবেনা কোন বাল্যবিবাহ, প্রতিষ্ঠানিক ভাবে শতভাগ বাচ্চার জন্মদানসহ সকলের জন্য চিকিৎসার সু ব্যবস্থা থাকবে, রিনিউএবল শক্তির হবে সুষ্ঠু ব্যবহার। ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে সবার জন্য সেবা নিশ্চিত হবে ও সরকারি অফিসের সেবা পৌছে যাবে গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায়। এর সাথে থাকবে সামাজিক মুল্যবোধ, নিজস্ব ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক সৌন্দর্য্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর একটি অন্যন্য গ্রাম।
গ্রামে রয়েছে ৪৯৩জন পুরুষ এবং ৫১৯ জন মহিলার বসবাস যাদের মধ্যে অর্ধেক জনসংখ্যা লিখতে পড়তে জানে না। বিবিএস এর তথ্য সূত্রে জানা যায়, গ্রামের মাত্র ৪জন পুরুষ এবং ২জন মহিলা চাকুরী করে, এছাড়া বাকিদের কৃষি কাজই মূল পেশা। সবমিলিয়ে বলতে গেলে একদম পিছিয়ে পড়া অনুন্নত একটি জনপদ হিজলী গ্রাম। স্মার্ট ভিলেজ গঠনের লক্ষ্যে অনেক পথ এগিয়েছে উপজেলা প্রশাসন, ইতিমধ্যে ৩টি বাড়িতে স্থাপন করা হয়েছে বায়ো গ্যাসপ্লান্ট যার মাধ্যমে গোবরের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে রান্না এবং আলোর ব্যবস্থা হয়েছে পাশাপাশি পরিবেশের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত হচ্ছে। এছাড়া জাইকার সহায়তায় গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ৫টি সোলার ষ্ট্রিট লাইটের মাধ্যমে গ্রাম আলোকিত হয়েছে, গ্রামে স্থাপন করা হয়েছে ১টি স্মার্ট বৈঠক খানা যেখানে ল্যাপটপের মাধ্যমে বৈঠক এ্যাপস ব্যবহার করে সপ্তাহে ১দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে সকল দপ্তরের সাথে সংযুক্ত হয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের তথ্য আদান প্রদান করতে পারবে এবং দ্রুত সেবা প্রাপ্ত হবে।
এতদিন দ্রুত সেবা দেওয়ার জন্য কোন অনলাইন প্লাটফরম ছিলোনা সেখানে চালু করা হয়েছে, ঝবৎারপব চৎড়ারফরহম চষধঃভড়ৎস’ (ঝচউচ) ‘স্মার্ট ভিলেজ হিজলী’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলা হয়েছে যেখানে তাদের খবরা খবর নিয়মিত আদান প্রদান করতে পারছে। গ্রামের ৩৩৪টি পরিবারের প্রায় ৫০০টি বাড়ির আঙ্গিনায় জমি অনাবাদি ছিলো সেখানে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ৭০শতক জমিতে পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে প্রয়োজনীয় সকল সব্জি উৎপাদিত হচ্ছে নিরাপদ খারের পাশাপাশি অতিরিক্ত উৎপাদিত সব্জি বাইরে বিক্রি করে অর্থ উপার্জণ করছে। রান্না ঘরের আবর্জনা দিয়ে ২০টি বাড়িতে জৈব সার তৈরির স্থান বানানো