• শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন

হরিণাকুণ্ডুর মেধাবী ছাত্রী নীলিমার আত্মহত্যার নেপথ্যে শ্লীলতাহানী

হরিনাকুন্ডু প্রতিনিধি / ৫৭ Time View
আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩

শ্লীলতাহানির শিকার হয়ে গত ৮ জুলাই মধ্যরাতে আত্মহত্যা করেন ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শ্রীফলতলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী নীলিমা খাতুন। চিকিৎসাধীন অবস্হায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি তার মৃত্যুর জন্য উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের ওলিয়ার রহমানের ছেলে রাসেল ও তার বান্ধবী সুমাইয়াকে দায়ী করে একটি চিরকুট লিখে যান।

বিষয়টি প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায় একটি প্রভাবশালী মহল। এ ঘটনায় নিলীমার পিতা আব্দুর রাজ্জাক ব্যাপারী বখাটে রাসেল ও বান্ধবী সুমাইয়াকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। নিলীমার লিখিত চিরকুট ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পরিচয় হয় হরিনাকুন্ডু উপজেলার মাঠ আন্দুলিয়া গ্রামের ওলিয়ার রহমানের ছেলে রাসেলের সাথে। রাসেল বিভিন্ন সময়ে নিলীমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসলেও কখনো সম্মতি দেয়নি নিলীমা। প্রত্যাখাত হয়ে রাসেল নীলিমাকে কৌশলে অপহরণের ছক কষে।

বিগত ঈদের ৩য় দিন (১ জুলাই) রাসেল কৌশলে নিলীমার বান্ধবী সুমাইয়াকে দিয়ে ফোন করে নিলীমাকে জোহান পার্কে বেড়াতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সাক্ষাত হয় রাসেলের সাথে। এরপর বান্ধবী সুমাইয়া সেখান থেকে কৌশলে সরে যান। এসময় পার্কের নির্জন স্হানে নিলীমাকে একা পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানি ঘটায় রাসেল। সে সময় নিলীমা রাসেলের ছক বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় নিলীমার কাছে থাকা একটি ট্যাব জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন রাসেল। কৌশল ও বুদ্ধি খাটিয়ে রাসেলের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরে আসে নিলীমা। এরপর রাত ১০ টার দিকে আত্মহত্যা করার জন্য ঘরে থাকা কীটনাশক সেবন করে ছটফট করতে থাকে নিলীমা। আহত অবস্হায় পরিবারের লোকজন নিলীমাকে উদ্ধার করে হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ জুলাই মধ্যরাতে মৃত্যুবরণ করে নিলীমা। হাসপাতালের বিছানায় অসুস্থ নিলীমা পুরো ঘটনা একটি সাদা কাগজে লিখে রেখে যান। স্থানীয় চেয়ারম্যান বসির উদ্দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,এভাবে ডেকে নিয়ে একজন মেধাবী ছাত্রীর সম্মানহানীর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তিনি আত্মহত্যা প্ররোচনাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান। মামলার বাদী আব্দুর রাজ্জাক জানান,সুমাইয়ার কারণেই তার মেয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। সে ডেকে নিয়ে বখাটের হাতে তুলে দিয়েছে নিলীমাকে। এখন একটি মহল সুমাইয়াকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। তিনি বখাটে রাসেল ও সুমাইয়ার গ্রেফতারের দাবী করেন। এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ডু থানার এস আই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অনিষ মন্ডল জানান, মামলা রেকর্ড হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করা যায় খুব দ্রুতই বখাটে রাসেল ও সুমাইয়াকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Ads 1