• শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন

হরিণাকুণ্ডুতে স্কুল ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করলেন শিক্ষক

হরিনাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ) থেকে রাব্বুল হুসাইন / ১৬৬ Time View
আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ মে, ২০২২

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের বাকচুয়া গ্রামের মুয়াজ খাঁন (১৬) নামের এক দশম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রকে স্টিলের রড় দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেছেন আব্দুর রাজ্জাক রাজু নামের এক শিক্ষক।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরের দিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বাকচুয়া লক্ষীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনাটি ঘটে। আহত মুয়াজ খাঁন উপজেলার বাকচুয়া গ্রামের টুটুল খাঁন এর ছেলে। জানা যায়, স্কুলে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অনুমতি স্বাপেক্ষে ফুটবল চাইতে যায়। এক পর্যায়ে ছাত্রদের বল দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বল না পেয়ে ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ছাত্র শিক্ষক কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের আব্দুর রাজ্জাক রাজু মাষ্টার উত্তেজিত হয়ে ছাত্রদের তাড়া করলে ভয়ে সবাই পালিয়ে গেলেও মুয়াজ খাঁন নামের এক শিক্ষার্থীকে বাগে পেয়ে যায়।

বিভিন্ন ভাষায় বাকবিতণ্ডের মধ্যে ঐ ছাত্র-কে স্টিলের রড দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন রনি নামের ঐ শিক্ষক। আহত অবস্থায় কাতরাতে কাতরাতে বাড়িতে আসলে মুয়াজের বাবা মা তাকে দ্রুত হরিণাকুণ্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত অবস্থায় ভর্তি করেন। সরজমিনে বাকচুয়া লক্ষীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, আমরা আগের দিন (২৫ মে) বুধবার ফুটবল খেলার জন্য প্রধান শিক্ষকের নিকট একটি আবেদন করি। প্রধান শিক্ষক আমাদের ফুটবল খেলার অনুমতি দেন। পরদিন (বৃহস্পতিবার) আমরা বল আনতে গেলে রাজু স্যার আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং আমাদের বন্ধু মুয়াজকে বেধরক মারপিট করেন। শুনছি আমাদের বন্ধুকে স্কুল থেকে টিসি দেবে,শুধু তাকেই নয়,সেই সাথে আমরা সবাই চলে যাবো এমনটাই জানান নাম না প্রকাশিত দশম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক রাজু মাষ্টারের সাথে শুক্রবার (২৭ মে) সরাসরি যোগাযোগ করলে,তিনি দৈনিক দেশের কন্ঠ প্রতিনিধিকে জানান, সামনে পরীক্ষা সেজন্য ছাত্রদের খেলা করার অনুমতি না দেয়ায় এমন ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া স্টিলের রড দিয়ে মারার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার এই কাজটি করা ঠিক হয়নি, বলেও সাংবাদিকদের কাছে ভুল স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুল রহমান (দুদু) মোবাইল ফোনে জানান, সামনে পরীক্ষা তাই ছেলেদের ফুটবল খেলা না করতে বলায় তারা উত্তেজিত হয়ে উঠলে এমটি ঘটেছে। আর তাছাড়া ঐ ছাত্রটি একটু বেশী উৎশৃংখল তাই আগামী কমিটির মিটিংয়ে তাকে এই স্কুলে রাখা যাবে কি-না সেই সিদ্ধান্তও নেয়া হবে। আমার ছেলেকে স্কুলে পড়াশোনা করতে দিয়েছি। আমি জানি লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ছাত্রদের মন মস্তিস্কের বিকাশ ঘটে। খুব বেশি যদি অপরাধ করেই থাকে তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানাতে পারতো। তা না জানিয়ে স্টিলের রড় দিয়ে পিটানোর অধিকার তো সরকার তাকে দেয়নি। এমনই হাজারও প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বিচার চাইলেন মুয়াজ খাঁন এর জননী।

এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান জানান, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। বাকচুয়া লক্ষীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মারার ঘটনা আমার জানা নেই। এদিকে ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষার্থী,অভিভাবকবৃন্দ ও আহত ছাত্রের পরিবারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ। এদিকে উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা তুষার জানান,রড দিয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের মারার ঘটনা টি অত্যন্ত দুঃখজনক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Ads 1