নানা কারনে বিতর্কিত হচ্ছেন ঝিনাইদহের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যগণেরা। ঝিনাইদহে ভিজিএফ এর চাউল আত্মসাতের ঘটনা ঘটার পরে নড়েচড়ে বসেছেন উপজেলা প্রশাসন,বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিটে যাচ্ছেন নিয়মিত। আর কর্তৃপক্ষ ভিজিটে আসার সংবাদ শুনেই গরিব কৃষকের জন্যে বরাদ্দ হওয়া পাট বীজ ও সারের বস্তা প্যাকেট কেটে ভাসিয় দেওয়া হলো পরিষদের পেছনের খালে।
এই ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার ৮নং চাদপুর ইউনিয়নে। জানা যায়,সরকারের পক্ষ থেকে, কৃষিতে পাটের উন্নয়নের জন্যে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পাট বীজ ও সার দেওয়ার কথা,কিন্তু ৮ নং চাদপুর ইউনিয়নের সচিব আশরাফুল ইসলাম ও সংশ্লিষ্টরা এই পাট বীজ ও সার আত্মসাৎ করে রেখেছিলেন। কিন্তু সদ্য ঝিনাইদহে তাহেরহুদা ইউনিয়নে চাউল আটক হবার পরে,বিভিন্ন চেয়ারম্যানের মুখোশ উন্মোচন হওয়াতে গত বুধবার ৮ নং চাদপুর ইউনিয়ন পরিষদে উপজেলা প্রশাসন ভিজিটে আসছেন এমন খবর পেয়েই সচিব আশরাফুল ইসলাম দুইজন চৌকিদার কুমারেশ ও অমরেশের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত পাট বীজ ও সার তড়িঘড়ি করে ইউনিয়ন পরিষদের পেছনের খালে প্যাকেট কেটে তা ভাসিয়ে দেন এবং প্যাকেট আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেন।
কিন্তু কথায় আছে,চোরের দশ দিন আর গেরস্তের একদিন,ঠিক সেই সময়ই ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই দৃশ্য। ভিডিওতে দেখা যায় ৮ নং চাদপুর ইউনিয়নের চৌকিদার কুমারেশ ও অমরেশকে দেখা যাচ্ছে সরকারের বরাদ্দকৃত পাট-বীজ ও সার একটি ছুরি দিয়ে প্যাকেট কেটে তা খালে ভাসিয়ে দিচ্ছেন এবং পা দিয়ে বীজের চিহ্ন মুছে দিচ্ছেন,এবং অবশিষ্ট প্যাকেট আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এবিষয়ে জানতে চাদপুর ইউনিয়নের চৌকিদার কুমারেশের বাড়ি মুচিপাড়ায় হাজির হন। সাংবাদিকদের জেরার মুখে চৌকিদার কুমারেশ বলেন ইউনিয়ন পরিষদে যে পাট-বীজ কৃষকদের দেবার কথা ছিলো তা দেওয়া হয়নি,হটাৎ করেই আমরা শুনলাম পরিষদে কারা যেনো ভিজিটে আসছেন,সেই কথা শুনে সচিব আশরাফুল ইসলাম আমাকে ও অমরেশ দাদাকে ডেকে বলেন এই তিন বস্তা পাটের বীজ খালে ভাসিয়ে দিতে এবং প্যাকেটগুলো আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে,আমরা গরিব মানুষ ছোট চাকরি করি তারা যা বলবেন আমরাতো তাই করবো। তিন বস্তায় কতো প্যাকেট পাট-বীজ ছিলো জানতে চাইলে চৌকিদার বলেন প্রায় ১৫০প্যাকেট পাটবীজ ছিলো।
এবিষয়ে ৮ নং চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আশরাফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার পরিষদে কোনে পাট-বীজ নাই, যা ছিলো সব দিয়ে দিছি,আর আমার নাম কেনো চৌকিদারেরা বলেছেন আমি জানি না। স্থানীয় কৃষক আব্দুল জলিল সাংবাদিকদের জানান,আমরা পাট বীজ নিতে গেলে আমাদের বলতো এবার পাটের বীজ আসেনি কিন্তু আমরা তো জানি পাটের বীজ আছে তবুও তারা দেয়নি।
এই সকল অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলতে ৮ নং চাঁদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: কামাল হোসেন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, এটা মিথ্যা ভিত্তিহীন যার কোনো সত্যতা নেই। স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণ ও কৃষকেরা এই ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়ে যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা জানান,বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।ঘটনাটি তদন্তপূর্বক ডিপার্টমেন্টাল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।