• সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ১০:৩০ অপরাহ্ন

স্বামী’র হত্যা মামলা তুলে না নেওয়ায় হরিণাকুন্ডুর এক বিধবাকে বাড়ি ছাড়া করার চেষ্টা

মোঃ শাহানুর আলম, ঝিনাইদহ / ৪৩ Time View
আপডেট টাইম : সোমবার, ২৮ জুন, ২০২১


হরিণাকুন্ডু ভাই ভাই ক্লিনিকে অপারেশনের সময় ডাক্তারের অবহেলায় স্বামীর মৃত্যু হয়েছে মর্মে কোর্টে মামলা করার কারনে হরিণাকুন্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের দুই সন্তানের জননী মৃত আঃ রহিম লিটুর স্ত্রী কয়তরী বেগম (৪২) নামে এক সদ্য বিধবা নারীকে বাড়ি ছাড়া করার চেষ্ঠা করছে একটি সন্ত্রাসী মহল। ক্লিনিক মালিকের অর্থের বিনিময়ে ঐ সন্ত্রাসী মহল কয়তরী বেগমকে মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত চাপ দিয়ে আসছে।
এলাকায় সরেজমিন তদন্তে জানা যায়,গত ২৫জুন কয়তরী বেগম তার ৩ বছরের মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিল এ সময় তার চাচা শ্বশুর নুরুল ইসলাম মনু (৬৫) ও তার ছেলে রমজান আলী (৩০) ও কয়েকজন বহিরাগত সন্ত্রাসী কায়দায় মামলা তুলে নিতে কয়তরিকে চাপ প্রয়োগ করে এবং তুলে না নিলে তাকে এই গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে বলে হুমকী দেয়। এসময় কয়তরি বেগম আত্মরক্ষার জন্য চিৎকার চেচামেচি শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে রক্ষা করে। এসময় তাদের সাথে মনু এবং তার ছেলে রমজানসহ কয়েকজন সন্ত্রাসীর সাথে গ্রামবাসীদের সংঘাত সৃষ্টি হয়, এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন সামান্য যখম ও আহত হয়। আহতরা হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। এবিষয়ে উভয় পক্ষই গত ২৬জুন হরিণাকুন্ডু থানায় একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।
উল্লেখ যে,গত ২৩ এপ্রিল দখলপুর গ্রামের মৃত সদর উদ্দীনের ছেলে আঃ রহিম লিটু অ্যাপেন্ডিসাইটিসে অসুস্থ হয়ে হরিণাকুন্ডু ভাই ভাই ক্লিনিকে অপারেশনের জন্য গেলে অপারেশন থিয়েটারে তার মৃত্যু হয়। পরে ক্লিনিক ম্যানেজার নজরুল ইসলাম, উপজেলা বেসরকারী ক্লিনিক এ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কুসুম টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিমাংসার জন্য দেন দরবার করলেও তাতে মামলার বাদী কয়তরি বেগমকে রাজি করাতে পারেনি। সেকারনে তার চাচা শ্বশুর মনু’র কাছে কিছু টাকা দিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় মামলা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
এবিষয়ে ভূক্তভোগী কয়তরি বেগম বলেন আমার স্বামীকে চিকিৎসকের অদক্ষতা বা অবহেলার কারনে হরিণাকুন্ডু ভাই ভাই ক্লিনিক থেকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমি এর বিচার চেয়ে কোর্টে ক্লিনিকের মালিক আলতাফ হোসেন, আসমত হোসেনসহ ৫ জনের নামে মামলা করি যার নং হরি পিটিশন ০৫/২০২১ । মামলাটি এখন থানায় তদন্তে রয়েছে। তিনি আরও বলেন মামলা তুলে নিতে আমার চাচা শশুর মনু ও তার ছেলেসহ বাইরের সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে চাপ দিচ্ছে এবং না তুললে বাড়ি ছাড়া করার হুমকী দিচ্ছে,আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত স্বাপেক্ষে বিচার চাই। একই গ্রামের আব্দুল হামিদ, ইউপি সদস্য আক্তারুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, ইনামুল ইসলামসহ আরও অনেকে বলেন বিষয়টি অমানবিক কয়তরির স্বামীর ভিটা থেকে তাকে কেউ উচ্ছেদ করতে পারেনা আমরা লিটু হত্যা সুষ্ঠু বিচার চাই।
নুরুল ইসলাম মনুকে বাড়িতে না পাওয়ায় তার স্ত্রী’র নিকট বিষটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাড়ি স্বাামী ক্লিনিক থেকে কোন টাকা পায়নি,তবে শুনেছি মামলা মিমাংশা করার জন্য নিহত লিটুর মাকে কিছু টাকা দিয়েছে। এজন্য আমার স্বামী মিমাংশা করে দিয়ার চেষ্টা করছে। মামলার অন্যান্য আসামীদের মধ্যে সেকেন্দার আলী এবং আলী হোসেন বলেন, এই মামলার সাথে আমরা কোন ভাবেই জড়িত নয়। আমরা ডাক্তার,নার্স, অ্যাসিস্ট্যান্ট, ক্লিনিকের মালিক,ম্যানেজার কিছুই নাই শুধু উদ্দেশ্যমূলক ভাবে স্থানীয় গ্রুপিং এর কারণে কিছু মানুষের ইন্ধনে পড়ে আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।ক্লিনিকে রুগী হত্যা মামলার বিষয়ে হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন মামলাটি তদন্তের জন্য আমাদের এখানে এসেছে। আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে কোর্টে হস্তান্তর করবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Ads 1