মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুর বন্দনা ও ‘তুমিই ধ্রুবতারা’
শেখ মিজানুর রহমান
রূপসী বাংলার ঐতিহ্যবাহী নবগঙ্গা, চিত্রা, গড়াই, বেগবতী, কালীগঙ্গা, কপোতাক্ষ, সঞ্চয়, কোদলা, ইছামতি ও ভৈরব নদীর সবুজ পলিতে গড়া আমাদের এ ঝিনাইদহ জেলা ছয়টি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত আর ছয় উপজেলায় স্থাপিত হয়েছে পৌরসভা।
ঝিনাইদহ জেলার সাথে অন্যান্য অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা অতি উন্নত মানের। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ‘সংযোগ সেতু’ হিসেবে রয়েছে ঝিনাইদহের আলাদা একটি পরিচিতি। খেজুরবীথি শোভিত অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত এবং উন্নত সাহিত্য-সংস্কৃতি সমৃদ্ধ আমাদের ঝিনাইদহ তাই সকলের এত প্রিয়। এই প্রিয় জেলার সদর পৌরসভার মেয়র জনাব সাইদুল করিম মিন্টুও সকলের প্রিয়।
এই প্রিয় মেয়র প্রাণঘাতী করোনা রোধে কাজ করে চলেছেন। মানুষকে বাড়ীতে অবস্থান করতে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করতে, মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করণে সর্বোপরি করোনা কালীন সকল স্বাস্থ্যবিধি মানতে মেয়রের তরফ থেকে বিরামহীন প্রচার-প্রচারনণা ঝিনাইদহবাসী লক্ষ করে আসছে সেই শুরু থেকে। সব কাজে তাঁর অগ্রণী ভূমিকার কথা সকলেরই কম বেশি জানা। আর তাই সাইদুল করিম মিন্টু যে একজন তরুণ উদ্যোমী, নীতিবান লড়াকু জননেতা তা ঝিনাইদহবাসীর কাছে নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। রাজনীতি ও জনসেবার পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতির সাথে জড়িতদের সাথে তাঁর মিল এবং রয়েছে গভীর সেবকের সম্পর্ক। শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, সাহিত্য ও সংস্কৃতি তিনি বরাবর গভীর আন্তরিকতার শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছেন। মনোয়ারা খাতুন, আসাদুজ্জামান খাঁন ও খায়রুল বাশারের উপর বই প্রকাশ তাঁর প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। ঝিনাইদহের কৃতি সন্তান ড. জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর নামে সড়কের নামকরণ তাঁর বড় মনের পরিচয়ের একটি উজ্জ্বলতম দিক। তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের সারথি হয়ে কাজ করেন। জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশকে নিয়ে এবং এদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেন। আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে নিজের অবস্থান থেকে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন সাইদুল করিম মিন্টু একজন নীতিবান সারথি হয়ে। তাঁর কঠোর পরিশ্রম আর জোর কর্মতৎপরতা ঝিনাইদহবাসীর সার্বিক কল্যাণে নিয়োজিত, ঝিনাইদহবাসীর কল্যাণ সাধনে তিনি ঝিনাইদহে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প এনেছেন এবং সেইসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
‘প্রেরণা ৭১’ এর নির্মাণ এবং ঝিনাইদহে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহিদ মিনার নির্মাণ তাঁকে স্মরণীয় ও বরণীয় করেছে সবার কাছে। তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করেন নি বা করছেন না এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া ভার। কিন্তু তিনি তাঁর গ্রামের বাড়ির কোন পরিবর্তন সাধন করে নি। আগে যা ছিল তাই আছে। বিশিষ্ট নারী নেত্রী দীপ্তি রহমানের সাথে আমি তাঁর গ্রামের বাড়িতে গিয়েছি এবং তৎকালীন সময়ের হরিণাকুন্ডুর প্রবল প্রতাপশালী আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম রুহুল কুদ্দুস যিনি তাঁর শ্রদ্ধেয় পিতা তাঁর কবরও জিয়ারত করেছি এক পড়ন্ত বিকেলে। ছায়া ঘেরা পাখি ডাকা এক নিভৃত পল্লি হরিণাকুন্ডুর ভায়না। সাইদুল করিমের জন্য অজপাড়া গাঁ ভায়না আজ ধন্য, ধন্য হরিণাকুন্ডু ধন্য ঝিনাইদহ।
কাজী পিকু সম্পাদিত ‘তুমিই ধ্রুবতারা’ গ্রন্থের, ড. তপন কুমার গাঙ্গুলীর লেখা ‘শিক্ষা-সংস্কৃতিতে নিবেদিত প্রাণ এক রাজনীতিক’ শীর্ষক প্রবন্ধটি পাঠ করলে সাইদুল করিম মিন্টুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রমাণ পাওয়া যায়। তাঁর বাচনভঙ্গি সুন্দর, আকর্ষণীয় ও সাবলীল। পিনপতন নীরবতায় মানুষ শোনে তাঁর বক্তৃতা। ইদানীং ঝিনাইদহ শহরের আলোচিত ব্যক্তি ও কবি-সাহিত্যিকদের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন গুলজার হোসেন গরিব এর লেখা- ‘বাচিক শিল্পী ও আধুনিক কবি সাইদুল করিম মিন্টু’ শীর্ষক প্রবন্ধটি পাঠ করলে ঝিনাইদহবাসী তাঁর সমন্ধে আরো অজানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার সুযোগ পাবেন। অপরদিকে ড. সিদ্ধার্থ শংকর জোয়ার্দ্দার এর লেখা ‘একজন সফল নগরপিতা ও তাঁর ‘উন্নয়নের স্বপ্ন’ প্রবন্ধটি শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সারথি সাইদুল করিম মিন্টুকে আরো বেশি করে ও গভীরভাবে জানবার সুযোগ করে দিয়েছে। সাধারণত একজন পিতাকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধকে যেমন স্মরণ করে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না তেমনি নগরপিতা সাইদুল করিম মিন্টুকে নগরবাসীর কোনো কিছু বলা বা তাগিদ দেয়া লাগে না তিনি তার নাগরিক দায়িত্ব সমন্ধে নিজ থেকেই অত্যন্ত সজাগ। আর এরই অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ নিয়ে মানুষ উৎকন্ঠিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেও অন্যান্য অনির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া ভুল তথ্য ও গুজব পরিস্থিতিকে যাতে নাজুক করে তুলতে না পারে সেজন্য ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে সাধারণ মানুষের খেদমতে তাঁর অবিরাম ছুটে চলা প্রশংসার দাবি রাখে কোভিড-১৯ অর্থাৎ করোনা ভাইরাস ডিটেকটেড-২০১৯ এর প্রাদুর্ভাব বা বিস্তার রোধে প্রশাসন, পৌরসভা স্বাস্থ্য বিভাগ, সেনবাবাহিনী ও পুলিশ বিভাগের নেয়া পদক্ষেপের কারণে ঝিনাইদহে মৃত্যুর হার অনেক কম।
২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সাইদুল করিম মিন্টু এসেছিলেন ঝিনাইদহ জেলা সাহিত্য পরিষদে স্মারক বক্তৃতা দেয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়ে। ঐ অনুষ্ঠানে তাঁকে উন্নয়নের সৈনিক হিসেবে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছিল। তিনি ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, আর সভাপতিত্ব করেছিলেন ঝিনাইদহ জেলা সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি ও ইতিহাসবিদ অধ্যক্ষ (অব:) আনোয়ারুল ইসলাম।
মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুকে ‘তুমিই ধ্রুবতারা’ গ্রন্থে সময়ের সাহসি কবি কাজী পিকু তাঁর এক গুচ্ছ কবিতার মাধ্যমে ঝিনাইদহবাসীর কাছে হাজির করেছেন উজ্জ্বল সূর্যের আলোর রশ্মির মতো করে। এ যেন সাইদুল করিম মিন্টুকে নিয়ে মহাকাব্য রচনার প্রাথমিক অবতারণা। ‘তোমার স্বপ্নে’ কবিতায় যুবকদের সাইদুল করিম মিন্টুর প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হওয়ার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে অত্যন্ত সুন্দর ভাবে। ‘সে ছাড়া’ কবিতায় সাইদুল করিম মিন্টুর মনন সৃষ্টি ও তাঁর মানব কল্যাণ ভাবনাকে বর্ণনা করা হয়েছে। এভাবে ‘নিবেদিত প্রাণ’, ‘উজ্জ্বল নক্ষত্র’, ‘দীর্ঘপথ’, ‘বিন্দু হতে বৃত্তে’, ‘অভিভাবক’, ‘অনাথ এতিম ছেলেটি’, ‘নৌকার বৈঠা হাতে’, ‘অনন্য উপমা’, ‘সাম্যের প্রেমে’, ‘প্রেরণা’, ‘তুমিই ধ্রæবতারা’, ‘চিন্তারা বেনিকাটে’, ‘হে কবি’, ‘আশার প্রদীপ’, ‘মুজিব সৈনিক’, ‘অনুভবের চোখ চাই’ ও ‘ধন্য তুমি ধন্য’ প্রতিটি কবিতাতেই সাইদুল করিম মিন্টু প্রতিফলিত হয়েছেন শত গুণাবলীর আধাররূপে। শূন্য থেকে জয় ছিনিয়ে আনা এক যুবকের আত্মকথা; জীবন যুদ্ধে বিজয় লাভ করা এক লড়াকু সৈনিকের ত্যাগের মহিমার প্রতিফলন ঘটাতে কাজী পিকু শব্দ চয়ন করেছেন বিচক্ষণতার সাথে। আর তাই দীর্ঘ রাত্রির অবসানে নতুন সূর্যের জয়গান গাওয়া নায়কের আত্মার কথা, সুর, ধ্বনি ও কথামালাকে পাঠকের সামনে হাজির করার দক্ষতা দেখাতে কাজী পিকু সমর্থ হয়েছেন। ‘তুমিই ধ্রæবতারা’ সম্পাদনার জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। কারণ ‘তুমিই ধ্রæবতারা’ যেন একটি আয়না যার মাধ্যমে ঝিনাইদহবাসী তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা সাইদুল করিম মিন্টুকে দেখার বিরল সুযোগ পেয়েছে।
মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু সমন্ধে তাঁর বোন দীপ্তি রহমান বলেন, মিন্টুর জন্য যদি কেউ এক গুণ করে তবে মিন্টু তার জন্য করে দশ গুণ। কথাটা সত্য কারণ বাইরে মেজাজী ভিতরে নরম অর্থাৎ কঠোরে-কমোল সাইদুল করিম মিন্টুর সাথে আছেন শিশু-কিশোর-যুবক থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষ। যদি তিনি মানুষের জন্য কিছু না করতেন তা হলে এত লোক তাঁর পিছনে থাকতো না। তাঁর রয়েছে সকলকে আপন করে নেয়ার এক আশ্চর্য মোহনীয় শক্তি।
সাইদুল করিম মিন্টু বন্দনার শেষ প্রান্তে এসে একথা বলা যায় জনতার ধিক্কারের মহা¯্রােতে ভেসে যাবে ধন্ধুমার অপপ্রাচারকারীরা আর বিজয়ী হবেন রাজনীতিতে, সামাজিকতায়, উন্নয়নেও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সফল মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু। প্রসঙ্গত তাই উল্লেখ করতে হয় কাজী পিকুর এক গুচ্ছ কবিতার ‘উজ্জ্বল নক্ষত্র’ কবিতাটি-
সাইদুল করিম মিন্টু
আওয়ামী লীগের উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের নাম।
সে রাজনীতিতে আসার আগে
নিজের ভিতর লুকিয়ে থাকা অন্ধকার
উৎসর্গ করেছে জল নুপুরের পায়ে।
সততা আর সৎ নীতিকে লালন করেছে
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সোনার বাংলা গড়তে।
আজ যারা রাজনীতির নোংরামিতে মেতেছো।
ভেবোনা সাইদুল করিম মিন্টু হারিয়ে যাবে
সে পূর্বের আকাশে লাবণ্যময় ঝিকিমিকি রোদ হয়ে হাসবে
আর তোমরা হারিয়ে যাবে
তোমাদেরই পাপের মহা অতলে।
ভাবাধার, শব্দ সম্পদ, শব্দের গাঁথুনির মাধ্যমে অপূর্ব এক দক্ষতার প্রথাগত রীতিনীতি ভেঙে এক স্বাধীন চিন্তা আর কর্মতৎপরতার প্রকাশ ঘটানো সাইদুল করিম মিন্টুকে তুলে ধরেছেন কাজী পিকু ঝিনাইদহবাসীর সামনে এই কবিতার মাধ্যমে। স্বাধীনতার স্বপ্ন সাধ বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার দীপ্ত সাইদুল করিম মিন্টুর জয় হোক সর্বক্ষেত্রে সব কাজে, সব সময় এটাই ঝিনাইদহবাসীর প্রত্যাশা।