মামলার জটিলতায় উন্নতমানের ঝিনাইদহ পৌরমার্কেটের কাজ বাধাগ্রস্থ,ভোগান্তিতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা
কাজী মোহাম্মদ আলী পিকু, ঝিনাইদহঃ
মামলার জটিলতায় উন্নতমানের আধুনিক সু শ্রি বহুতল বিশিষ্ট ঝিনাইদহ পৌর সুপার মার্কেটটির নির্মাণ কাজ বন্ধ। পুরাতন মার্কেটের সাধারণ দোকান মালিক ব্যবসায়ীরা আজ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ মার্কেট নির্মাণ করা নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ৬ মাস আগে আদালত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। সেই থেকে অত্যাধুনিক মার্কেটটির কাজ বন্ধ করে দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় একটি পক্ষের ষড়যন্ত্র আর মামলার জটিলতায় বর্তমানে বন্ধ হয়ে আছে বহুতল মার্কেটের নির্মাণ কাজ।আদালতের আদেশ অমান্য করে নির্মাণ কাজ চলমান রাখা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করেন মামলার বাদীপক্ষ। গত ৬সেপ্টেম্বর রোববার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিন নির্মাণাধীন মার্কেট এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ ও পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান পিপিএম।এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, বাদীপক্ষ তাকেসহ পুলিশ সুপারকে বিবাদী করেছেন। ইতোমধ্যে বাদীপক্ষ থেকে নিয়োজিত আইনজীবী আদালত অবমাননার নোটিশ করেছেন। যে কারণে প্রকৃতপক্ষে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে কিনা, সরেজমিনে এলাকাটি পরিদর্শন করা হয়েছে।
আদালতের আদেশপ্রাপ্ত হওয়ার পর পৌর কর্তৃপক্ষ মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানান তিনি।অত্যাধুনিক পৌর মার্কেট নির্মাণে সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, পৌর ভবনসংলগ্ন জমিতে প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা করে ঝিনাইদহ পৌরসভা। কিভাবে এই শহরকে আরো উন্নত একটি শহরে রূপ দেওয়া যায়, সে ভাবনা থেকেই আমি কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। যার অন্যতম একটি হলো পৌর মার্কেট নির্মাণ।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এখানে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটি বিপণিবিতান তৈরি করা হচ্ছে। শুরু থেকেই মাকের্ট নির্মাণ নিয়ে একটি পক্ষ ষড়যন্ত করে আসছে। আদালতের আদেশ মোতাবেক নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া সত্ত্বেও একটি পক্ষ শহরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ করার কারণে এর প্রভাব পড়ছে সামাজিক ক্ষেত্রে। একটা আধুনিকমানের শপিং মল হলে পৌরসভার আয় বাড়বে। এই ভালোটা কারও সহ্য হচ্ছে না।তবে সকল ষড়যন্ত্র ও মামলার জট নিরসনে পৌর মেয়র চলতি অর্থবছরেই কাজ শুরু করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মেয়র মিন্টু আরো বলেন,ঝিনাইদহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রথম টু.ই.ডি ক্লাব ছিল, পরবর্তীতে তা পৌরসভায় হস্তান্তরিত হয়। ১৯৭৪ সালে সাবেক চেয়্যারম্যান আমির হোসেন মালিথা শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। পৌর ভবনের সামনে ১৯৭৮ সালে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন একটি মার্কেট নির্মাণ করেন। ১৯৯৫-৯৬ সালে সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান খোকা কমিউনিটি সেন্টার, দ্বিতল পৌর মার্কেট নির্মাণ করেন। ২০০৬ সালে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক নতুন পৌর ভবন নির্মাণ করেন এবং ভবনের পাশে কিছু বেঞ্চ স্থাপন ও ঝাউ গাছ লাগান । উক্তস্থানে প্রকৃতপক্ষে কোন শিশু পার্ক ছিল না। যেখানে বর্তমানে ঝিনাইদহ পৌরসভা একটি অত্যাধুনিক মার্কেট নির্মাণ করতে যাচ্ছে। মার্কেটটির নির্মাণ কাজ শেষ করে ব্যবহার উপযোগী করা গেলে ব্যবসায়ী ও শহরবাসীর বহুমুখী কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হবে। পাশাপাশি ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার আয় বাড়বে, বেকারত্বও কমবে বলে মনে করেন তিনি।এদিকে পুরাতন মার্কেটের সাধারণ দোকান মালিকরা জানান, নতুন মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার ফলে তারা চরম আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। চলমান পরিস্থিতিতে মার্কেটটি নির্মাণ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও তারা জানান।স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে মার্কেটটির নির্মান কাজ দ্রুত শেষ করে আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে তাদের বাঁচাতে।