• সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ১১:২৮ অপরাহ্ন

বিউটিপার্লার কোন ধরণের শিল্প?

Reporter Name / ১৫২ Time View
আপডেট টাইম : রবিবার, ৩ মে, ২০২০
বিউটিপার্লার কোন ধরণের শিল্প?

বিউটিপার্লার কোন ধরণের শিল্প ?

পিকে নিউজ ডেস্কঃ

বিউটিপার্লার শিল্পটা আসলে ক্ষুদ্র, কুঠির না মাঝারি শিল্প ? এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছিলাম আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সৌন্দর্যবিষয়ক গবেষক ও লেখক, কসমিটোলজিস্ট মোঃ এ.কে.এস অনিমিথ এর কাছে। তিনি আমাদেরকে এ প্রসঙ্গে অনেক অজানা তথ্য দেন, যা পাঠকদের জন্য হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো- ” ১৯৫৭ সালের ৩০ শে মে পূর্ব পাকিস্তানে ইপসিক ( EPSCIC) গঠিত হয়, স্বাধীনতার পর এটা বিসিক ( BSCIC) নামে পরিচিতি পায় । বেসরকারী খাতে শিল্প উদ্দ্যোক্তা তৈরি করাই যার মুল লক্ষ্য। বিসিকের ঢাকাতে ১ টি,ঢাকা-চট্টগ্রাম-রাজশাহী-খুলনাতে আঞ্চলিক কার্যালয় ৪ টি,৬৪ জেলাতে ৬৪ টি অফিস সহ মোট ৭৬ টি শিল্প সহায়ক কেন্দ্র রয়েছে সারাদেশে।বিসিকের শিল্প উন্নয়ন দায়িত্বের মধ্যে পার্লার শিল্পটি রয়েছে,ইতিপূর্বে বিসিক এবং সৌন্দর্য শিল্পটা এদেশে থাকলেও এবং সারাদেশে বিসিক ও সৌন্দর্য শিল্পের কার্যক্রম থাকলেও এ শিল্পটি কোন সম্মানজনক শিল্পে পরিণত হতে পারেনি আজো। বহুবছর ধরে এ শিল্পে কাজ করেন অনেকেই আছেন যাদের অধিকাংশই জানেন না তার পার্লারটি আসলে কোন শিল্পের অন্তর্গত! এবার জানি কোন ধরনের পার্লার ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্ভুক্ত ? একক-অংশীদারি বা সমবায় ভিত্তিতে গড়ে উঠা যেসব পার্লার জমি-অফিস ভবন বাদে অন্যান্য স্হায়ী সম্পদের মূল্য বা প্রতিস্হাপনের ব্যয় দেড় কোটি থেকে ১০ কোটি টাকার নিচে তারাই ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্গত।

এবার আসি কোন পার্লার কুঠির শিল্পের অন্তর্গত ? ৫ লক্ষ টাকার নিচে মুলধন ও ১০ জনের নিচে পারিবারিক সদস্য বা পারিবারিক পরিমন্ডলে সৌন্দর্য সেবা কর্মকান্ডে নিয়োজিত তারাই কুঠির শিল্পের অন্তর্গত। কুঠির শিল্পটা মাক্রোশিল্প ( microindustry) বলা হয় যখন এটার মুলধন ৫ লক্ষ হতে ৫০ লক্ষ টাকা ও ১০-২৪ জন মানুষ কাজ করে।পার্লারের মুলধন যখন ১ কোটি হতে ১৫ কোটি টাকার নিচে এবং কর্মিবাহিনী ৫০ হতে ১০০ জন তখনই এটা মাঝারি শিল্পের অন্তর্গত। কিন্তু আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের সৌন্দর্য শিল্পটা বড্ড হিংসায় ভরা শিল্প যা অজ্ঞতাই- অযত্নে-অসচেতনতায় ও সরকারী উদাসীনতায় চলমান। ব্যক্তিগতভাবে আমি বলব বাংলাদেশের সৌন্দর্য শিল্পটি বর্তমানে ক্ষুদ্র-কুঠির-মাঝারি শিল্প নয় বরং ” রুগ্ন শিল্প” এর অন্তর্ভুক্ত। কত পার্লার, কত স্বপ্ন নিয়মিত বন্ধ হয়েছে, হয়ে যাচ্ছে এবং যাবে তার খোজ কেউ রাখে না। সরকারিভাবে ” রুগ্ন শিল্প বিষয়ক টাস্কফোর্স” গঠিত হয়েছে কয়েক বছর পূর্বে কিন্তু আমরা তার কোন কার্যক্রম দেখি না। এসব পার্লার কেন বন্ধ হচ্ছে? সচল রাখার উপায় কি? দোষ কার? দায়ী কে? এসবের জন্য যারটা তার ছাড়া আর কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। সরকারীভাবে কোন সমন্বিত নীতি বা আইন নেই। এসব বন্ধ হলে যে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হয়, কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়ে অসংখ্য নারী-পুরুষ বোঝায় পরিণত হয়,কত অসহায় নারী-পুরুষ ভুল ও বিতর্কিত পথে পা বাড়ায় এবং আত্মহত্যাও করে তা কর্তৃপক্ষকে কখনোই বোঝানো সম্ভব হয়নি ।

পার্লারের সকল সমস্যাকে আমি ২ ভাগে ভাগ করি ( ১) অভ্যন্তরীণ সমস্যা (২) বাহ্যিক সমস্যা। অভ্যন্তরীণ সমস্যার মধ্যে আছে প্রয়োজনীয় মুলধনের সংকট,অনুন্নত ব্যবস্হাপনা,সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব,আমিই সর্বসেরা ভাবা এবং বাকিদেরকে অবমুল্যায়ন করা, সহজে প্রয়োজনীয় পণ্য না পাওয়া,মার্কেটিং এর সমস্যা সহ নানা রকম ব্যক্তিগত অসুবিধা । বাহ্যিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহামারি, ব্যবসায়ে উদাসীনতা, আন্তর্জাতিক দরের বাজার উঠানামা,চাহিদা হ্রাস,রাজনৈতিক সমস্যা ইত্যাদি। অজ্ঞতা, ভুল প্রশিক্ষণ দেয়া আরা প্রতিহিংসা ভরা এ শিল্পে সরকার যদি সুস্পষ্ট নীতিমালা করে এবং সুনজর দিয়ে এ সকল সমস্যা সমাধান করে দেয় তবে এই সৌন্দর্য শিল্পটি অনেকদুর অগ্রসর হতে পারবে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আমি আশা রাখি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Ads 1