ঝিনাইদহে রেমিটেন্সের এর ভুয়া কাগজপত্র ও স্বাক্ষর জাল করে শহরের হামদহ অগ্রনী ব্যাংকের শাখা থেকে প্রতারক চক্র প্রায় ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে চম্পট দিয়েছে। এ নিয়ে রোববার ব্যাংক পাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়। প্রতারক চক্রকে ধরতে ও প্রতারনার টাকা উদ্ধারে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
এদিকে প্রতারনার কাজে ব্যবহারিত জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরীর দায়ে শহরের সমবায় মার্কেটের মোলা কম্পিউটার থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে একটি কম্পিউটার। খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন অগ্রনী ব্যাংকের ডিজিএম মানস কুমার পাল। এর আগে এই চক্রটি চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রতারনার মাধ্যমে ঝিনাইদহ শৈলকুপার জনতা ব্যাংক থেকে মোটা অংকের টাকা একই ভাবে উত্তলন করে।
পুলিশ ও ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ সুত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে একদল প্রতারক জাল জাতীয় পরিচয়পত্র ও রেমিটেন্সের এর ভুয়া কাগজ নিয়ে অগ্রনী ব্যাংক হামদহ শাখায় প্রবেশ করে। এরপর ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ক্যাশ থেকে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৫৫ টাকা তুলে নেয়। ৭টি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র’র বিপরীতে এই টাকা উত্তলন করা হয়। টাকা উত্তলন করতে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র ও ব্যাংক এর ম্যানেজার এবং রেমিটেন্স অফিসারের সাক্ষর জাল করা হয়। জাল জাতীয় পরিচয়ত্রে যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তারা হলেন ,ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ছোট কামারকুন্ডু গ্রামের আব্দুল্লাহ এর ছেলে মিজান, একই গ্রামের সাহাবুদ্দীনের ছেলে আজাদ, আব্দুল মালেকের ছেলে আবুল, ষাটবাড়িয়ার মানিক মিয়ার ছেলে মহশীন, একই গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে আলমগীর, জয়নাল আবেদীনের ছেলে হাসান ও লেহাজ উদ্দীনের ছেলে আশরাফ উদ্দীন। খবর পেয়ে রোববার বিকালে ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঝিনাইদহ শহরের সমবায় মার্কেটের মোল্লা কম্পিউটারে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক ও একটি কম্পিউটার জব্দ করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ অগ্রনী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার আরিফ উদ্দীন বলেন, আমি কিছুক্ষনের জন্য আঞ্চলিক অফিসে গেলে এই সুযোগে তারা জাল কাগজপত্র এমনকি আমার এবং ব্যাংকের রেমিটেন্স অফিসার আব্দুল মান্নানের সাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নিয়ে চম্পট দেয়। তিনি বলেন এ বিষয়ে আমরা সিসিটিভির ফুটেজ পুলিশকে দিয়েছি। প্রাথমিক ভাবে ক্যাশ অফিসার সাইফুলকে দায়ী করে তার কাছ থেকে এই টাকা রিকোভারি করে ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে ক্যাশ অফিসার সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করবেন বলেও ম্যানেজার আরিফ উদ্দীন জানান।
ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, তদন্তের স্বার্থে এখন আটক ও অন্যান্য জড়িতদের নাম প্রকাশসহ অনেক তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না। আমরা প্রতারক চক্রকে সনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। উল্লেখ্য দেশব্যাপী ব্যাংকগুলোতে জাল কাগজপত্র তৈরী করে টাকা উত্তোলনের ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও ঝিনাইদহ অগ্রনী ব্যাংক হামদহ শাখায় বাড়তি কোন সতর্কতা ছিল না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। এর আগে গত ৮ জুন জনতা ব্যাংক শৈলকুপা শাখা থেকে প্রতারণা করে চার লক্ষাধিক টাকা নিয়ে উধাও হয় প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় সুমী বেগম নামে এক মহিলা প্রতারককে আটক করে পুলিশ। আটককৃত সুমি বেগম খুলনার তেরখাদা উপজেলার নলিয়ারচর ইউনিয়নের বলরধনা গ্রামের কামাল হোসেনের স্ত্রী।