ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অবরুদ্ধ করে জায়গা-জমি দখল এবং গ্রাম থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
কাজী মোহাম্মদ আলী, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ হাফিজুর রহমান এর পরিবারকে অবরুদ্ধ করে তার জমি-জমা দখল করে তাকে গ্রাম থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে একটি প্রভাবশালী মহল। গতকাল বৃহষ্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমানের কন্যা শাহনাজ পারভীন। এ সময় তার পিতা অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান ও মাতা রোকেয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন। শাহনাজ পারভীন তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন তার পিতা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় তার মাকে নিয়ে ফুরসন্দি গ্রামে একাকি বসবাস করছে। তার পিতার তিন কন্যা বিয়ের পর সবাই স্বামী-সংসার করছে ও একমাত্র পুত্র সন্তান ঢাকায় চাকুরীরত। তিনি অভিযোগ করেন তার অসুস্থ পিতা মাতাকে নিয়ে একা বাড়িতে থাকার সুযোগে এক বছর আগে একই গ্রামের প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থাকা দুর্বৃত্ত হালিম, অশ্বিন, আনসার, রেজাউল তার পিতার নামিয় ২৫৮ নং ফুরসন্দি মৌজার ৩৬৩ নং দাগের উপর অবস্থিত প্রায় ৭০ হাজার টাকা মুল্যের একটি গাছ কেটে নেয়। তিনি আরো জানান তাদের মিয়া বংশের পক্ষ থেকে একই মৌজার ৩৬৪ নং দাগের ২৪ শতাংশ জমি গ্রামের ঈদগার নামে দান করে। কিন্তু ওই মহলটি ঈদগার জায়গা জোর করে দখল নিয়েছে। এখন তারা ৩৬৪ নং দাগের জায়গাটি ঈদগার নামে জোর দখল করে নিয়েছে। এ ছাড়া ঐ মহলটি তার পিতার ৩৫১ নং দাগের ০৭ শতক জমি জোর করে ভোগ দখল করছে গ্রামের আরেক প্রভাবশালী সোহান মিয়া। অন্য দিকে আমার পিতার ৩৪৮ দাগের ০৬ শতক জমি প্রভাব খাটিয়ে নিজ নামে রেকর্ড করে নিয়েছে গ্রামের আরশাফ মিয়া ।
শাহনাজ পারভীন তার লিখিত বক্তব্যে আরো অভিযোগ করেন জোর দখলের ধারাবাহিকতায় তার দাদার আমলের আশ ঝাড়ের বাশ কাটতে গেলে আরশাফ মিয়ার ছেলে তারিকুল মিয়া আমার পিতা-মাতাকে কুড়াল দিয়ে কোপাতে আসে এবং বাশ ঝাড়ের কাছে আসলে সে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করবে বলে হুমকী দেয়। নির্যাতনের কাহিনী এখানেই শেষ নয় আমার অসুস্থ পিতা-মাতাকে একা পেয়ে গ্রামের হারুন মোল্লা তার সকল ময়লা ও নোংড়া পানি ড্রেন করে তার পিতার বাড়ির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় হারুন মোল্লার স্ত্রী আল্লাদি বাইরে থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে তার মাতাকে মারধর করে। এ ছাড়া আরশাফ মিয়া, আশ্বিন পাড়ার লোকদের দিয়ে আমার পিতা-মাতাকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করে আসছে।
তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্য হয়েও তার পিতাকে আজ নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। ভুমি দস্যুরা তার জমি-জমা জোর করে দখল নিচ্ছে। প্রভাব খাটিয়ে আমার পিতার সম্পত্তি নিজেদের নামে রেকর্ড করে নিয়েছে। বড় পরিতাপের বিষয় দুই মাস আগে তার পিতা নারিকেল বাড়িয়া পুলিশ ফাড়িসহ ঝিনাইদহ থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি। যাতে তার পিতা আর কোন অভিযোগ না করতে পারে সেই জন্য ওই সকল সন্ত্রাসী ও ভুমি দস্যুরা তার পিতা-মাতাকে তাদের বাড়িতে বিভিন্ন ভাবে হুমকী ধামকী দিয়ে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তিনি জানান খবর পেয়ে ঢাকা থেকে পিতার বাড়িতে এসেছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে আক্ষেপ করে বলেন আজ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার চরম নিরাপত্তা হীনতার মধ্যে দিন যাপন করছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং স্থানিয় প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।