ঝিনাইদহে পথ ও পথিকের আশায় আজও দাড়িয়ে আছে ব্রিজটি
পিকে নিউজ ডেস্ক,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সুরাট ইউনিয়নের সুরাট গ্রামে রাস্তা নেই তবু নির্মাণ করা হয়েছে ব্রিজ। এর প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। যার দুই পাশে নেই কোন রাস্তা। পথ ও পথিকের আশায় আজও দাড়িয়ে আছে ব্রিজটি। ব্রিজটি এখন ধান শুকানোর কাজে ব্যবহার করছে স্থানীয় লোকজন। অভিযোগ উঠেছে জমি বাবদ মালিককে কোন প্রকার অর্থ পরিশোধ না করেই এ ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সুরাট গ্রামের ঝাপের খালের উপর এক পায়ে পথের মধ্যে ১৬ লাখ ৩১ হাজার ৩২৫ টাকা ব্যয়ে ২০ ফিটের ব্রিজটি নির্মাণ করেন দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করেছে ঝিনাইদহের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জেন্টস ফ্যাশান।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই কাজের টেন্ডার হয়। তৎকালীন জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন নিজে উপস্থিত থেকে এই টেন্ডারের লটারি পরিচালনা করেন। কিন্তু এই এক-পায়ের পথে সরকারের এত টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণের দরকার ছিলনা বলেই মনে করেন এলাকাবাসী।
এই বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিউটন বাইডেন বলেন, আমি এখানে যোগদান করার পূর্বেই ব্রিজটি নির্মাণের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। ওই সময় আমার কিছুই করার ছিলো না।
এই বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা বজলুর রশিদের কার্যালয়ে সাক্ষাতের জন্য ৩দিন গেলেও তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি।তাকে মোবাইলে বার বার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।এই অফিসের এক কর্মচারী জানান,আমরা শুধু পোস্টম্যানের মত চিঠি আদান প্রদান করি। প্রকল্প বিষয়গুলি সব উপজেলা প্রকল্প অফিসাররা দেখেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝিনাইদহ থেকে সুরাট যাওয়ার পাকা রাস্তার পাশেই ঝাপের খালের পাশ দিয়ে পশ্চিমে মাঠে যাওয়ার এক পেয়ে পথের মাথায় নির্মাণ করা হয়েছে ব্রিজটি। এই ব্রিজের উপর ধান শুকাচ্ছে স্থানীয় এক নারী। রাস্তা করার সরকারি কোন জমিও নেই এখানে। ব্রিজের পূর্ব পাশে একশত ফিট ও পশ্চিম পাশে কয়েকশত ফিটের মধ্যে কোন রাস্তাও নেই। ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্তে জলাকার ২০-২২ফিটের মত। জায়গা দেখে মনে হচ্ছে পুকুর খনন করা হয়েছে। পূর্বে এই জায়গায় পানি জমে না থাকলেও ব্রিজ নির্মাণের বৈধতা দেখাতে এখানে পরে খনন কাজ করা হয়েছে।
নাচনা-সুরাট সড়কের সাথে এই ঝাপের খালে ২০০ মিটারের মধ্যে আরও ২টি ব্রিজ রয়েছে। এই দুটি ব্রিজে সংযুক্ত খাল দিয়ে আশপাশের ফসলি মাঠ থেকে বৃষ্টির পানি নেমে যায়। ঝাপের খালের এই ব্রিজটি সর্বোচ্চ ৫-৬ বিঘা জমির পানি নামার জন্য উপকারে আসতে পারে। তাহলে কার প্রয়োজনে এই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে এমন প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি প্রকল্পের টাকা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির আশায় নামে মাত্র একটি প্রকল্প দেখিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লীষ্ঠরা।
এদিকে জমির মালিক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, আমার জমি বাবদ কোন প্রকার অর্থ প্রদান না করেই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। আমির এর সুষ্ঠু বিচার চাই।