ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের দুই সহকারী অধ্যাপক লাঞ্চিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে একদল বহিরাগত দুস্কৃতিকারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনকে শারিরীক ও মানসিক ভাবে লাঞ্চিত করে।
কালীগঞ্জ খানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও তারা ক্যাম্পেসে যাননি বলে অভিযোগ। ফলে
বিকাল পর্যন্ত বহিরাগতরা দুদকের কিছু নথি হাতিয়ে নিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে কালেজের একটি কক্ষে আটকে রাখে। এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য ঝিনাইদহ -৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার এবং কলেজের নন এমপিও ভুক্ত শিক্ষক সুব্রত ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মন্ডল জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ সময় কলেজের দুই কর্মচারী তাপস ও সবুজ ভারভাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেনকে টানা হ্যাচড়া করে।
এদিকে শিক্ষক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় জেলাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। শিক্ষকরা আন্দোলনের হুমকীও দিয়েছেন। লাঞ্চিত শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন
অভিযোগ করেন তিনি তার ডিপার্টমেন্টে জরুরী কাজ করছিলেন। এ সময় স্থানীয় এমপিসহ কিছু বহিরাগত দুস্কৃতিকারীরা তার রুমে প্রবেশ করে এমপি আনার “তুই শিবির করিস” এই বলে চড় থাপ্পড় মারেন। এতে তিনি
কানে গুরুতর ব্যাথা পান। এসময় এমপির নিদের্শে দুজন কর্মচারী তাকে টেনে হিচড়ে বাইরে নিয়ে আসে। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি বলেও জানা যায়।
কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার বিকালে জানান, কলেজ থেকে সরকারী খাতা চুরির বিষয় নিয়ে কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশক্রমে একটি চুরির মামলা করা হয় আদালতে। মামলাটি বর্তমান সিআইডি তদন্ত করছে। এই মামলার স্বাক্ষি আছেন গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন। এ কারণে তার উপর ক্ষুদ্ধ
আসামীরা। তারাও ওই কলেজে চাকরী করেন। এ কারণে বহিরাগতদের ডেকে নিয়ে খাতা চুরি মামলার আসামী রকিবুল ইসলাম মিল্টনসহ অন্যান্যরা তাকে চড় থাপ্পড় মারে। অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান আরো জানান, কলেজের কাজে সহকারী অধ্যাপক মোঃ মোশাররফ হোসেন কে সাময়িক ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়ার পর নন এম পিও ৬১ নং সিরিয়াল ধারী জুনিয়র প্রভাষক সুব্রত কুমার নন্দী ও খাতা চুরির মামলার আসামি সাবেক উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল চুরির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বহিরাগত, কলেজের স্টাফ সবুজ ও পিয়ন তাপসের সহায়তায় ত্রাস সৃষ্টিসহ সহকারী অধ্যাপক মোশাররফ লাঞ্চিত করে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বলেন, দুদকের একটি ফাইল হাতিয়ে নিতে সুব্রত ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল তাকে অপমান অপদস্ত এমনকি মারধর করতে উদ্যোত হন। কিন্তু এ ধরণের একটি সরকারী ডকুমেন্ট নিতে হলে কালীগঞ্জ ইউএনওর সম্মতি ছাড়া দিতে পারবেন না বলে তাদের সাফ জানিয়ে দেন। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে সুবিধা করতে না পেরে তাকে ছেড়ে দেন বলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন জানান।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, কলেজের বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। তাই তিনি কিছুই জানে না। অধ্যক্ষ তাকে জানানোর পরও ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি কেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।