সেনাবাহিনীর সিভিল পদে চাকরি দেবার নামে জামাই এবং তার শ্বাশুড়ির প্রতারণাচক্র হাতিয়ে নিয়েছে বহু মানুষের টাকা। আর সেই টাকা মাসিক সুদের বিনিময়ে খাটিয়ে এলাকার মানুষকে জিম্মি করে তাদের সর্বশান্ত করে চলেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌর এলাকার দরবেশ কসাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী নবিরন খাতুন ও তার জামাই চুন্নু আলি খোন্দকার। নিজেকে সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা দাবিদার,চুন্নু আলির বাবার নাম খোন্দকার আফসার আলি। তিনি রাজবাড়ির পাংশা উপজেলার রায়নগর গতমপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঝিনাইদহের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী শৈলকুপা আদালতে দায়েরকৃত মামলায় (মামলা নম্বর-
শৈল/সি.আর/২৯৮/২২, তারিখঃ ০২/১১/২০২২) বলা হয়েছে- নিকট আত্মীয় হবার সুবাদে নবিরন খাতুন ও তার জামাই চুন্নু আলি খোন্দকার উপজেলার বরিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের কাছে প্রস্তাব করে যে তাদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা ছেলেকে সেনাবাহিনীর সিভিলপদে চাকরি দেবে। এজন্য দু’লাখ টাকা তাদের কর্মকর্তাকে অগ্রিম দিতে হবে। চুন্নু আলি নিজেকে পাংশার একজন পদস্ত’ পুলিশ কর্মকর্তার আপন সহোদর বলেও দাবি করে আনোয়ার হোসেনকে প্রলুব্ধ করে অবশেষে তা এক লাখ টাকায় রফা করে। তিনি একজন কথিত সেনাকর্মকর্তার
মোবাইলফোন নম্বরও দেন এবং তার সাথে আনোয়ার হোসেনের চাকরিপ্রার্থী ছেলের কথা বলিয়ে বিশ্বাস অর্জণ করেন। কথামত ২০ মার্চ ২০২২ তারিখে চুন্নু আলির দেয়া ডাচবাংলা ব্যাংক লিমিটেড-এর ১৬৩১৫১০১০৫৯১২ হিসাব নম্বরে ৫০ হাজার টাকা এবং ২২ মার্চ ৩৫ হাজার জমা দেয়া হয়। একই দিন নবিরন খাতুন আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে এসে মৌখিক চুক্তির বাদবাকি ১৫হাজার টাকা নগদে বুঝে নেন। বেশ কয়েক মাসেও ছেলের চাকরি না হওয়ায় আনোয়ার হোসেন নবিরন খাতুনকে খবর দিলে তারা বাড়িতে এসে উপস্থিত লোকদের সামনে টাকা ফেরৎ দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। ফলে উপায়ান্তর না পেয়ে আনোয়ার হোসেন আদালতে মামলা করতে বাধ্য হন।
স্থানীয়রা জানান,নবিরন খাতুন ও তার কথিত ঘরজামাই চুন্নু আলি খোন্দকারের পাল্লায় পড়ে এলাকার বহু বেকার যুবক সব খুইয়ে পথে বসেছে। এ নিয়ে বহুবার গ্রামে শালিস দরবারেও চুন্নু আলি খোন্দকারের প্রতারণার বিষয়টি সমাধান হয়নি। দরবেশ কসাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী নবিরন খাতুন ও তার জামাই চুন্নু আলির বিষয়ে জানতে চাইলে দরবেশ আলির প্রথমপক্ষের ছেলে সাবেক পৌর কমিশনার আব্দুল হান্নান জানান,তার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী নবিরন খাতুনের জামাই চুন্নু আলি তার নিজের এলাকা থেকে বিতাড়িত হয়ে শৈলকুপায় পরিবার পরিজন নিয়ে এসে শ্বাশুড়ির সহায়তায় নিরীহ মানুষের সর্বনাশ করেই চলেছে। তারা বিষয়টি নিয়ে বেশ বিব্রত। আদালত সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী শৈলকুপা আদালতে দায়েরকৃত মামলায় মূল প্রতারক চুন্নু গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচেছন।