ঝিনাইদহ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাঞ্চন নগর গ্রামের মৃত শেখ মোহাম্মদ আলী’র ছেলে এসএম আনোয়ার হোসেন ঠিকাদারির কাজ করেন। করোনার ভ্যাকসিনের নিবন্ধন করতে গিয়ে জানতে পারলেন তিনি মৃত। তিনি বাড়িতে ফিরে পরিবারের লোকজনকে জানালে সবার চক্ষু চড়ক গাছ।
বাঁচতে হলে করোনার টিকা নিতে হবে এমন চিন্তায় ঘুম না আসা এসএম আনোয়ার হোসেন নির্বাচন কমিশনের খাতায় ২০১৮সালের আগেই মৃত। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পৌরসভা থেকে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করেন পুরাতন জাতীয় পরিচয় পত্র জমা দিয়ে। এর মধ্যে আর কোন নির্বাচনে ভোট দিতে যাননি। ভোটার তালিকায়ও তিনি মৃত। বুধবার এই প্রতিবেদকের কাছে তিনি অভিযোগ করেন,ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী হাই স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম তার এলাকায় ভোটার তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনিই আমাকে মিথ্যা তথ্যে মৃত দেখিয়েছেন। শরিফুল ইসলাম বলেন,বাড়ির লোকজনের কাছে শুনে ওনার তথ্য ফর্ম পূরণ করা হয়। ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই রকম করিনি। তার ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন এই শিক্ষক।
সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ মশিউর রহমান জানান,তথ্যগত ভুল হয়েছে। আবেদন করে সংশোধন করা যাবে। এদিকে জাতীয় পরিচয় পত্রে এত বড় ভুলের জন্য টিকা নিতে পারছেন না এসএম আনোয়ার হোসেন। ঝিনাইদহে করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বগতির কথা চিন্তা করে এখনই টিকা নিয়ে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। শতবার টিকা নিবন্ধনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এই বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শামীম কবির জানান,সরকার ৮০ শতাংশ লোককে টিকার আওতায় আনার চিন্তা করেছেন। সেই লক্ষ্যে নিবন্ধন না করে শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার লিখে রেখে টিকা দেওয়া ব্যবস্থা করছে। এই ব্যবস্থা চালু হলে তিনি টিকা নিতে পারবেন।
এদিকে নির্বাচন অফিসের দৃষ্টিতে এই ঘটনা খুব ছোট হলেও এমন সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। কারও বাবা-ছেলের বয়সের পার্থক্য ২ বছর,নামের বানান ভুল,সার্টিফিকেটে এক নাম জাতীয় পরিচয় পত্রে আরেক নাম,প্রকৃত বয়সের চেয়ে জাতীয় পরিচয় পত্রে বয়স ১৫-২০ বছর কম বা বেশী এমন সমস্যা নিয়ে প্রতিদিনই নির্বাচন অফিসে ভীড় করতে দেখা যায় অসংখ্য লোকের। ভুক্তভোগীদের দাবি সরজমিনে না গিয়ে তথ্য সংগ্রহকারীদের নিজেদের খেয়াল খুশিমত তথ্য দেওয়ার ফল ভোগ করছেন তারা। উপযুক্ত প্রশিক্ষিত নেই এমন অনেকেই স্বজন প্রীতির মাধ্যমে কাজ পেয়ে ভুল-ভাল ভাবে তথ্য পূরণ করেছেন। তথ্য সংশোধন বা হারিয়ে যাওয়া কার্ড ফিরে পেতেও ভোগান্তি পোহাতে হয় অনেক দিন।