• শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:১৬ অপরাহ্ন

জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ- ২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলে জল্পনা কল্পনা- জরিপে এগিয়ে সাইদুল করিম মিন্টু।

এম.এইচ রুবেল,ঝিনাইদহ / ১৯৪ Time View
আপডেট টাইম : সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী, চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

নির্বাচনকে ঘিরে ঝিনাইদহ -২ আসনে তৃণমূলে নেতা কর্মী ও সমর্থকেরা আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন করছেন। কে হবেন নৌকার মাঝি? তা নিয়ে ভাবনার অন্ত নেই তাদের মাঝে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার প্রার্থী দেয়া হয় সফিকুল ইসলাম অপুকে। উক্ত নির্বাচনে তাহজিব আলম সিদ্দিকী সমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আনারস মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে এমপি নির্বাচিত হন। দলীয় কোন্দলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী সফিকুল ইসলাম অপু। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে তাহজিব আলম সিদ্দিকী সমি কে নৌকার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং তিনি পুনরায় এমপি নির্বাচিত হন। তিনি দুই বার নির্বাচিত থাকার পরও এলাকায় কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এবারও তিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রধানের কাছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন এবং ভোটে নির্বাচিত হবেন বলে আত্মবিশ্বাসী তার কর্মী সমর্থকরা।

তবে তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা বলছেন ভিন্ন কথা। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে বলে মনে করছেন, তৃণমূল পর্যায়ের ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, তাহজিব আলম সিদ্দিকী টানা দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েও তৃণমূলের পোড় খাওয়া নেতা-কর্মীদের সাথে কোন যোগাযোগ রাখেন নি। তিনি দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থেকেও আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে কোন সক্ষতা গড়ে তুলতে পারেন নি। ইউনিয়ন পর্যায় মুল আওয়ামী লীগ বাদ দিয়ে কিছু হাইব্রিড নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে চলেছেন। সেই সব নেতারা বিএনপি জামায়াত পন্থী লোকদের সাথে যোগসাজস করে নিজ দলের কর্মীদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছেন। তাদের ভাষায় এমপির সাথে থাকা প্রত্যেকটি ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা এমপির দাপট দেখিয়ে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা কর্মীদের অবমূল্যায়ন, মিথ্যা মামলা,ও স্থানীয় পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছেন।

এ কারণে দলের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মী সমর্থকরা। শহর আওয়ামী লীগের এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, জনবিচ্ছিন্ন এই সাংসদ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে রেখেছেন। যা আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। পাগলাকানাই ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আছাদুজ্জামান সুজন বলেন,বর্তমান এমপি সমি সিদ্দিকী দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরও জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়েছেন। মনোনয়ন যোগ্যতায় মাঠপর্যায়ে ত্যাগী, কর্মীবান্ধব, আন্দোলন সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগ দলকে টিকিয়ে রাখা জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে সাইদুল করিম মিন্টু। এমনটি দাবি করেছেন গ্রাম এলাকার নেতা কর্মীরা। ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হেভিওয়েট প্রার্থী হিসাবে শক্ত অবস্থানে রয়েছে সাইদুল করিম মিন্টু। তিনি ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও টানা দুই মেয়াদের জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কঠোর পরিশ্রম, মেধা, ও সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় দিয়ে ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের ভিত শক্ত করে রেখেছেন। আন্ডারওয়ার্ল্ড খ্যাত দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ভয়ংকর জনপদ বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত ঝিনাইদহ জেলাকে দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে গড়ে তুলেছেন সাইদুল করিম মিন্টু। তৎকালীন পৌরসভার মেয়র থাকাকালীন তিনি পৌর এলাকায রাস্তা-ঘাট, ড্রেন,ও উন্নতমানের মার্কেট, নবগঙ্গা ওয়াকওয়ে নির্মান,গরীব, মেধাবি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় সহযোগিতা করাসহ নাগরিকদের সমস্যার সমাধান করেছেন। মহামারী করোনার সময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিজ অর্থায়নে সাধ্যনুযায়ী কর্মহীন খেটে খাওয়া পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাক্স সহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করেছেন। করোনা মহামারীতে আতংকিত হয়ে মানুষ যখন ঘরবন্দী তখন তিনি জীবনের মায়া ত্যাগ করে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে -ওয়ার্ডে, প্রতিটি ঘরে ঘরে নিজে উপস্থিত হয়ে গরিব দুঃখী মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া বিভিন্ন অনুদান তিনি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়েও পৌঁছে দিয়েছেন। পোড়-খাওয়া, কর্মীবান্ধব, তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আশ্রয়স্থল, ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আশা আশির দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা, ২১ আগষ্টে গ্রেনেড হামলায় আহত, শেখ হাসিনার আস্থাভাজন, বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সাইদুল করিম মিন্টু কে আগামী সংসদ নির্বাচনে এমপি হিসাবে দেখতে চান তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তাদের ভাষায় প্রতিদ্বন্দিমূলক নির্বাচনে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নেতা মনোনয়ন পেলে নৌকার বিজয় সম্ভব হবে।

তারা আরও বলেন বর্তমান সংসদ সদস্য তাহজিব আলম সিদ্দিকী শিল্পপতি হওয়ায় ব্যবসায়িক হাতিয়ার হিসেবে সংসদ সদস্য পদটি ব্যবহার করে আসছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহবাসি এলাকার উন্নয়ন ও সবসময় পাশে পাওয়ার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক সভাপতি বলেন, সংসদ সদস্য পদটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হন এবং জনগণকে সাথে নিয়েই তাদের মূলত কাজ। কাজেই গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি সাধারন মানুষ দেশ ও এলাকার কল্যাণে কাজ করার জন্য স্থানীয় নেতা সাইদুল করিম মিন্টুর বিকল্প কেউ নেই। সাধারণ নেতা কর্মীরা সাইদুল করিম মিন্টুকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এমপি হিসাবে দেখতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Ads 1