ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে পানের বরজে ২ সপ্তাহে ৫বার পানের আগুন লেগেছে। পুড়ে গেছে ২৫ বিঘার উপরে পানের বরজ। প্রতিবছর কৃষকরা ফেব্রুয়ারি মার্চের দিকে ঢাকায় ঢোল সাজিয়ে নিয়ে গিয়ে পান বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা ঘরে তোলে।
বছরের অন্য সময় স্থানীয় বাজারে খুচরাভাবে বিক্রি করে মুজরী খরচ তোলে কৃষকর্ধাসঢ়;। কিন্তু ঢাকায় পাঠানোর আগে ২ সপ্তাহের মধ্যেই ৫ বার আগুন লাগা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। এদের মধ্যে কোন বরজের পান বিক্রি করতে পারলেও এক তৃতীয়াংশ পানবরজের পান অবিক্রিত ছিল। কৃষকদের ধারণা ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ তাদের ক্ষতি করছে। জানগেছে, গত ১২ ফেব্রæয়ারি শনিবার দুপুর ২টা ৫ মিনিটের দিকে আগুন লেগে গ্রামের কাজী পাড়ার নাপতির ভিটা মাঠে মৃত সুধির দাসের ছেলে গৌতম দাসের ২৫ কাঠা ও নরোত্তম দাসের ১০ কাঠা,মৃত নলিনী কান্ত দাসের ছেলে সিন্ধু দাসের ৭কাঠা,অরবিন্দু দাসের ৭কাঠা, বিশ্বজিত দাসের ১৫ কাঠা,শ্যামাপদ দাসের ছেলে পলাশ দাসের ১১০ কাঠা, মৃত ফকির চাঁদ মন্ডলের ছেলে শাহাজান আলীর ১০ কাঠা, রমজান আলীর ছেলে টিক্কা খানের ১০ কাঠা, মৃত আখের মন্ডলের ছেলে চিনির উদ্দিনের ৫ কাঠা,মৃত আরশেদ আলীর ছেলে চাঁদ আলীর ৫কাঠা, চাঁদ আলীর ছেলে আখতারের ১০ কাঠা, সলেমান মন্ডলের ছেলে আমির হোসেনের ১২ কাঠা,আনিছুর রহমানের ১২ কাঠা ও মিজানুর রহমানের ১৮ কাঠা এবং অবনি দাসের ছেলে নিশিত দাসে ১০ কাঠা জমির পান ক্ষেতে পুড়ে ভষ্মিভূত হয়।
এর আগে ১১ ফেব্রæয়ারি শুক্রবার হরিপদ পরামানিকের ছেলে সঞ্জয় পরামানিকের ৪ কাঠা ও সুজন পরামানিকের ৪ কাঠা পানের বরজ ভষ্মিভূত হয়। গত ৯ ফেব্রæয়ারি বুধবার মৃত সন্যাসী দাসের ছেলে জগবন্ধু দাসের ৫ কাঠা পানের বরজ পুড়ে যায়। গত জানুয়ারি মাসের ২১ তারিখ মৃত ভরসা মন্ডলের ছেলে সুবাহান মন্ডলের ৩৩ কাঠা বরজ পুড়ে যায়। ২৪ জানুয়ারি সুবাহান মন্ডলের ছেলে সোহাগ আলীর ৩৩ কাঠা, মৃত আফান মন্ডলের ছেলে পান্টু মন্ডলের ১০ কাঠা ও মন্টু মন্ডলের ১০ কাঠা এবং মৃত আখের মন্ডলের ছেলে মুরাদ আলীর ১০ কাঠা জমির পানের বরজ আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। এই দিন আগুন নিভাতে গিয়ে মুরাদ আলীর ছেলে নায়েব আলী কলার ক্ষেত নষ্ট করে ফেলেছে ফায়ার সার্ভিস ও সাধারণ মানুষেরা। এই বিষয়ে কুশনা ইউপির চেয়ারম্যান শাহারুজ্জামান বলেন, ২ সপ্তাহের মধ্যে ৫টি আগুনের ঘটনা শুনলাম। বিষয়টি আসলেই রহস্যজনক।
আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের বিষয়ে তদন্ত করে দেখবো কেউ ইচ্ছা করে আগুন লাগিয়েছে কিনা। কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ ওয়ার্ডের মেম্বার জীবন কুমার হালদার জানান, বর্তমানে পানের বেশ ভালো দাম রয়েছে। কেউ কেউ ঢাকায় পাঠাবে। দুয়েকজন পাঠিয়েছেও। তবে এই নাপতির ভিটার মাঠেই কেন একের পর এক বরজে আগুন লাগছে। এখন তো গরমের সময়ও নয় যে বিড়ির আগুন থেকে আগুন লেগে যেতে পারে। শীতকালে বরজের মধ্যে এমনিতেই ছ্যাতছেতে পরিবেশ থাকে। তদন্ত করা দরকার। কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মহাসীন আলী জানান, আমরাও এই বিষয়টি নিয়ে বিচলিত রয়েছি। কৃষকরা সন্দেহাভাজন কারও নামে অভিযোগ করতে চায় না।
অভিযোগ করলে তদন্তে সুবিধা হয়। তিনি আরও বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে এই বিষয়ে জরুরী পরামর্শ করে কৃষকদের পক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি। ভুক্তভোগীরা এখনও শঙ্কায় আছে আবারও এমন অগ্নিকান্ড ঘটতে পারে বলে। এব্যাপারে প্রশাসনের সু দৃষ্টি কামনা করেছেন ।