প্রায় সাড়ে সাত বছর পর ঝিনাইদহে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগেরসম্মেলন। আগামী ১৩নভেম্বর শহরের ওয়াপদা মাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে ঘিরে শহরে চলছে সাজ সাজ রব। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, তোরন এসবে ঝিনাইদহ শহর পেয়েছে এক নতুন রুপ। পদ প্রত্যাশি নেতাদের কর্মী সমর্থকরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জননেত্রী শেখ হাসিনা, তারুন্যের অহংকার সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবিসহ তাদের পছন্দের নেতাদের ছবি দিয়ে পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড সাটানো হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে বিশেষ
করে সমাবেশ স্থানের পাশ থেকে মুজিব চত্ত্বর হয়ে পায়রা চত্ত্বর, সার্কিট হাউজ রোড বিশেষ করে যেখানে নেতাদের চোখ পড়তে পারে এমন সবখানেই লাগানো হয়েছে বিল বোর্ড, ব্যানার, পোস্টার।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আরও যারা বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন, এমপি, কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা ও কার্যনির্বাহী সদস্য গ্লোরিয়া সরকার, এমপি।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপি, এবং সভা সঞ্চালনায় থাকবেন সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু। বিগত ২০১৫ সালের ২৫মার্চ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সম্মেলনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই এমপি সভাপতি ও সাইদুল করিম মিন্টু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমানে সকল জল্পনা-কল্পনা পেছনে ফেলে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হবে-এমনটাই প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মিরা। জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুটি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে প্রায় এক ডজন চেনা মুখ। কাউন্সিলকে ঘিরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদের জন্য একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও তাঁদের মধ্যে বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই এমপি, বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ঝিনাইদহ ২আসনের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম অপু, সভাপতি পদে ঝিনাইদহ জেলার দানবীর বলে খ্যাত জাহেদী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল, সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাডঃ আজিজুর রহমান, সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা তৈয়ব আলী জোর্য়াদ্দার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুর রশীদ এ্যাডঃ এর নাম শোনা যাচ্ছে। তাদের ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড শহরের অলিতে গলিতে শোভা পাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য জেলা আ‘লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র, জেলা ছাত্রলীগের
সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম আনার এমপি, ঝিনাইদহ-২ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি, জেলা
আ‘লীগের বর্তমান যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অশোক কুমার ধর, জেলা শ্রমিক লীগের নেতা আক্কাচ আলী, জেলা আ‘লীগের বর্তমান যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক অ্যাডঃ আক্কাচ আলী ও সাবেক ছাত্রনেতা মাসুদ রানা মডেল সাধারণ সম্পাদক পদের প্রত্যাশি বলে শহরে তাদের ব্যানার পোস্টার লাগিয়েছেন।
ঝিনাইদহে জেলা আওয়ামী লীগ এখন বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে তাদের অনুকুলে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে। সন্ধ্যা পার হলেই শহরের পায়রা চত্ত্বর, পোস্ট অফিস মোড়দিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদের প্রত্যাশিদের সমর্থকরা মিছিল বের করে থাকে। দলের একটি পক্ষ যারা মিছিল মিটিংএ ব্যস্ত থাকে তারা দলের এই গতিশীলতা ধরে রাখতে বর্তমান সাধারণ সম্পাদককে আবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চায়। কেউ কেউ আবার দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন আশা করেন। তবে দলে প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে ক্লিন ইমেজের সৎ ত্যাগী ও দক্ষ নেতৃত্ব চাই তৃনমূলের নেতা কর্মিরা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃণমূলকে সুসংগঠিত করে কাজ করলেই কেবল পরাজয় ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।