ঝিনাইহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে অসময়ে বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের পাকা ধানে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার রোরো ধান চাষীরা চরম হতাশায় পড়েছে।
এহেন পরিস্থিতিতে একদিকে শ্রমিক সঙ্কট,অন্য দিকে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়া বোরো ধান চাষীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।আশা-নিরাশার দোলাচলে কাঁদছেন উপজেলার বোরো ধান চাষীরা।কেটে রাখা ধান বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। ধানের ফলন ও দাম ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। ধান ঘরে তোলার শেষ মুহূর্তে বৈরী আবহাওয়া ও অতি বৃষ্টির কারণে চাষিরা পড়েছেন চরম উৎকণ্ঠায়। এ ছাড়া শ্রমিক সঙ্কটে ধান ঘরে তোলা নিয়ে খুব চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা। এ উপজেলায় ঈদের পরপরই ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়া কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় অনেক কৃষক তাদের আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার আপ্রান চেষ্টা করছেন।
এ সময় পুরোদমে ধানকাটার মৌসুম শুরু হলেও এখন পর্যন্ত অধিকাংশ কৃষক ক্ষেতের ধান ঘরে তুলতে পারে নি। ধারণা করা হয় যে দু’এক সপ্তাহের মধ্যে মাঠের পাকা ধানগুলো কেটে ঘরে তুলে নেয়ার সম্ভাবনা ছিল। এদিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,এবছর বোরো ধান চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। গতবারের তুলনায় এবছর বোরো আবাদ লক্ষমাত্রার চেয়ে কম হয়েছে। উপজেলার ভায়না,তাহেরহুদা, শিতলী, রঘুনাথপুর,চাঁদপুর,জোড়াপুকুর,মান্দার তালা,দখলপুর,কেষ্টপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে,সোমবার থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় মাঠের পর মাঠ পাকা ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে কেটে রাখা ধান পানির নিচে থাকায় নিরাশার জাল বুনছে কৃষকেরা। হতাশায় হতভাগা কৃষকের স্বপ্ন এখন পানিতে ভাসছে। এ বিষয়ে উপজেলার শিতলী গ্রামের কৃষক সামাদ বিশ্বাস জানান,এবছর দেড় বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছিলাম। অনেক কষ্টার্জিত সোনার ফসল ঘরে তোলার আগেই বৃষ্টির পানিতে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। একই এলাকার কৃষকরা জানান,তাদের কিছু কিছু জমির ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন,বাকি ধানের কপালে কি আছে তা একমাত্র আল্লাহ তালাই জানেন।
এবারে বোরো ধানের আবাদ কম হলেও ফলন ভালো হয়েছিলো।বৃষ্টি শুরু হওয়ার পূর্বে যে সমস্ত কৃষক তাদের ধান কেটেছিলো তাদের কোন ক্ষয় ক্ষতি হয় নি। তবে যে সমস্ত চাষী হালকা আবহাওয়া ভালো দেখে ধান কেটে জমিতে ফেলে রেখেছে তাদের একটু ক্ষতি হতে পারে। বৃষ্টির কারণে যে সমস্ত বোরো ক্ষেত তলিয়ে গেছে,সে সমস্ত ক্ষেতের আইল কেটে দ্রুত পানি বের করে দিতে পরামর্শ দেন তিনি। তাছাড়া যেসব ধান মাটির সাথে নুয়ে গেছে সেগুলো খুব একটা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না বলে জানান,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাফিজ হাসান।