অভিভাবকহীন ঝিনাইদহ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান
কে এম সালেহ, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ষ্টেডিয়াম ঘিরেই জেলার সকল খেলা
ধুলার আয়োজন হয়ে থাকে। এই মাঠ থেকেই আনেক জাতীয় পর্যায়ের
খেলোয়াড় তৈরী হয়েছে। তারা দেশের বিভিন্ন খেলায় প্রতিনিধ্বিত্ব করে
সুনাম বয়ে নিয়ে এসেছে।
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ষ্টেডিয়াম, গত দুই বছরে একেবারেই পরিত্যক্ত
অবস্থায় পড়ে আছে। করোনা মহামারির কারণে ও গত কমিটির মেয়াদ ২০১৯
সালের জানুয়ারি মাসে শেষ হবার পর কোনো খেলা ধুলা না হওয়ায় এক প্রকার
শ্রীহীন অবস্থায় রয়েছে ষ্টেডিয়ামটি। ষ্টেডিয়ামের গ্যালারিসহ মাঠের
মধ্যে চারপাশ ঝোপ জঙ্গল এ পরিপূর্ণ হয়ে আছে। গরুর খাবারের জন্য মাঠ
থেকে ঘাস কেটে নিয়ে যাচ্ছে এলাকার লোকজন। সাবেক এক ফুটবল
খেলোয়াড় বলেন খেলাধুলা নেই নিধিরাম সরদার শুধু চেয়ারটা নিয়ে চলে
রাজনিতি, দেশে কত সংবাদপত্র কেও একটু লেখে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তদেরি রাজনৈতিক কার্যালয় বনে
যায় ষ্টেডিয়াম টি। মাঠের দক্ষিন দিকে ক্রিকেটের প্রাকটিসের জন্য
দুইটা নেট আছে মটরসাইকেল পার্কিং করার জন্য ক্রিকেট খেলোয়াড়রা
ঠিক মত প্রাকটিস করতে পারেনা।
ডিস্ট্রিক ফুটবল এসোসিয়েশন জেলা ক্রীড়া সংস্থার মর্জি মাফিক সদস্য না থাকায় ডিএফএ কে মাঠ ব্যবহার করতে দেয়া হয়না । ডি এফ এর কার্যক্রম তাই স্কুল কলেজ ও পাড়া মহল্লার মাঠ কেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ। ডি এফ এর ব্যানারে কোনো ইভেন্টই করতে দেয়া হয়না এই মাঠে। ২০১৬ সালের পর থেকে জেলা ক্রীড়াসংস্থার অধিনে কোন
ফুটবললীগ হয়নি। যেহেতু জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের আন্ডারে ফুটবল
খেলা হয় সেই জন্য জেলা ক্রীড়াসংস্থা ফুটবললীগ আয়োজন করে না। ২০১৭-
২০১৮ মৌসুমে সর্বশেষ ক্রিকেট লীগ হয়। তবে স্কুল ক্রিকেট ও বয়স
ভিত্তিক ক্রিকেট প্রতি বছর নিয়মির হয়. করোনার কারনে তাও বন্ধ আছে।
সরকারি কিছু অনুষ্ঠান ছাড়া জেলা ক্রীড়াসংস্থা’র দুই বছর খেলার কোন
আয়োজন চোখে পরেনা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে জেলার খেলাধুলা ঝিমিয়ে
পড়ায় এবং কোন টুনামেন্ট না হওয়ায় ভালো মানের কোন খেলোয়াড় জন্ম
নেচ্ছেনা। ক্রিকেট ও ফুটবলে লাল সবুজের জার্সি গায়ে চাপিয়ে
অন্তর্জাতিক এবং ঢাকার মাঠে সুনামের সাথে খেলেছে ঝিনাইদহের
খেরোয়াড়রা। ঝিনাইদহের ক্রীড়া অঙ্গন এখন অভিভাবক হিন। ২০১৫ সালের ০২
জানুয়ারি জেলা ক্রীড়াসংস্থার সাধারণ স¤পাদক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন
করেন জীবন কুমার বিশ্বাস। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ফুটবললীগ, ক্রিকেটলীগ
ও ভলিবল টুনামেন্ট আয়োজন করে। তার মেয়াদ শেষের দিকে আবারও খেলাধুলা
ঝিমিয়ে পরে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে তার মেয়াদ শেষ হয়। মেয়াদ শেষে
ক্রীড়াসংস্থা গতিশীল রাখতে ও নির্বাচন পরিচালনার জন্য এডহক কমিটি
গঠিত হয়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর একটি পক্ষ “নির্বাচনের
পরিবেশ নেই” এই অযুহাতে নির্বাচন টি যাতে না হতে পারে তার জন্য
স্থগিতাদেশ চেয়ে মহামান্য হাই কোর্টে রীট পিটিশন দাখিল করে। উচ্চ
আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারনে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। সাথে সাথে
এ্যাডহক কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়। তবে এই
আপদকালীন সময়ে ক্রীড়াসংস্থা পরিচালনা ও ক্রীড়ার কার্যক্রম সচল রাখার জন্য
প্রশাসনের ৪কর্মকর্তা দায়িত্বে রয়েছেন। অভিভাবকগন, খেলোয়াড়,
সংগঠকদের দাবী যত দ্রæত সম্ভব জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন স¤পন্ন
করে স্টেডিয়ামকে খেলাধুলার উপযোগী করা হোক। তারা মনে করেন খেলাধুলার
জগতে নেই এমন গুটি কয়েক ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বার্থের হাতিয়ার হিসাবে
পরিণত হয়েছে ষ্টেডিয়ামটি। খেলাধুলা বন্ধ থাকায় স্থানীয় কোমলমতি বাচ্চারা সহ উঠতি খেলোয়াড়রা নিদারুন হতাশার মধ্যে রয়েছে , তাদের মধ্যে মাদকের ভয়াবহতা ঢুকে যাওয়ার ঝুকিতে রয়েছে।
এবিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন মহামাণ্য
হাইকোর্টের নিদের্শনার আলোকে কমিটি গঠনের নির্বাচনী
কার্যক্রমসহ কমিটি গঠনের সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়। তবে
এই আপদকালী সময়ে ক্রীড়াসংস্থা পরিচালনা ক্রীড়ার কার্যক্রম সচল রাখার জন্য
প্রশাসনের ৪কর্মকর্তা দায়িত্বে রয়েছেন। দীর্ঘ করোনাকালীন সময়ে
খেলাধুলার সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে তবে এরই মধ্যে দুস্থ এবং অস্বচ্ছল
খেলোয়াড়, সংগঠক ও প্রশিক্ষকদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
খেলায় ফিরে আসার জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি, খুব শীঘ্রই স্টেডিয়াম
সরব হবে বলে আশাকরছি।